শংকরপুর ভ্রমণ গাইড – বাংলার গোপন সমুদ্র সৈকতের স্বাদ নিন
শংকরপুর – বাংলার হিডেন বীচ রত্ন
পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রভ্রমণের তালিকায় দিঘা, মন্দারমণি কিংবা তাজপুরের নাম থাকলেও, যাঁরা একটু নিরিবিলিতে প্রকৃতির সান্নিধ্য খুঁজছেন তাঁদের জন্য আদর্শ এক গন্তব্য হল শংকরপুর। এটি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক নির্জন সমুদ্র সৈকত যা তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত হলেও সৌন্দর্যে ও শান্তিতে ভরপুর।
কেন শংকরপুরে ঘুরে আসা উচিত?
যাঁরা জনসমাগম এড়িয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দে হারিয়ে যেতে চান, শংকরপুর তাঁদের জন্য একদম পারফেক্ট। এখানে নেই বড় হোটেলের ভিড়, নেই উচ্ছ্বাসিত পর্যটকদের কোলাহল — বরং আছে সবুজ বনানী, ছোট মাছ ধরার নৌকা, ও শান্ত সমুদ্রতট। দিঘা থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে হলেও এই সৈকতের পরিবেশ অনেক বেশি প্রশান্তিকর ও অফবিট।
দর্শনীয় স্থান ও অভিজ্ঞতা
- নিঃসঙ্গ সৈকতের অভিজ্ঞতা: এই সৈকতে হাঁটলে মনে হয় আপনি প্রকৃতির সঙ্গে একান্তে কথা বলছেন। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য যেন ছবি আঁকার মত সুন্দর।
- মাছ ধরার কার্যকলাপ: ভোরবেলা ছোট ছোট মাছ ধরার নৌকা যখন সমুদ্র থেকে ফিরে আসে, তখন স্থানীয় জেলেদের কার্যকলাপ দেখার সুযোগ পাবেন।
- কাছাকাছি হিডেন স্পট: শংকরপুর থেকে অল্প দূরত্বে তাজপুর, চাঁদপুর কিংবা রামনগরের মত ছোট ছোট সৈকত ও গ্রামের জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
কীভাবে যাবেন শংকরপুর?
রেলপথ: হাওড়া স্টেশন থেকে দিঘা গামী ট্রেনে চেপে দিঘা নেমে সেখান থেকে গাড়ি বা অটোতে শংকরপুরে পৌঁছানো যায়।
সড়কপথ: কলকাতা থেকে বাস বা ব্যক্তিগত গাড়িতে দিঘা রোড ধরে সহজেই পৌঁছানো যায়। দিঘা থেকে মাত্র ২০ মিনিটের পথ শংকরপুর।
থাকার ব্যবস্থা
শংকরপুরে এখন বেশ কিছু মাঝারি মানের হোটেল, গেস্ট হাউস ও কটেজ গড়ে উঠেছে। আগে থেকে অনলাইনে বুক করে গেলে ভালো সুবিধা পাওয়া যায়। যারা শান্তি ও নিরিবিলি পরিবেশে থাকতে চান তাঁদের জন্য এখানকার হোটেলগুলো আদর্শ।
খাবার-দাবার
শংকরপুরে স্থানীয় রেস্তোরাঁয় আপনি পাবেন টাটকা সামুদ্রিক মাছ, ঝাল-মশলাদার বাঙালি রান্না ও কিছু আন্তর্জাতিক পদ। ফ্রেশ Pomfret, Bhetki বা Prawn ভাজা-ভাতের সঙ্গে দারুণ লাগবে।
সতর্কতা ও পরামর্শ
- সৈকতে জোয়ারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
- স্থানীয়দের অনুমতি নিয়ে ছবি তুলুন।
- প্রকৃতিকে পরিষ্কার রাখুন। প্লাস্টিক ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
সারাংশ
যারা জনপ্রিয় সমুদ্র গন্তব্যের চেয়ে শান্ত, নিরিবিলি, প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুটা সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্য শংকরপুর এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এটি কেবল একটি ট্রিপ নয়, বরং মানসিক প্রশান্তি পাওয়ার এক অসাধারণ সুযোগ। এবার ছুটি হোক অফবিট শংকরপুরে!
