চিংড়ি মালাইকারি রেসিপি – নারকেল দুধে তৈরি রাজকীয় স্বাদের বাঙালি পদ
চিংড়ি মালাইকারি – রাজকীয় স্বাদের নারকেল দুধে চিংড়ির অপূর্ব মেলবন্ধন
চিংড়ি মালাইকারি – নামেই যেন রাজকীয় গন্ধ। বাঙালি রান্নার এই অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মর্যাদাসম্পন্ন পদটি মূলত চিংড়ি মাছ এবং নারকেল দুধের মোলায়েমতা নিয়ে গড়ে ওঠা এক অসাধারণ স্বাদের তরকারি। এটি শুধু উৎসব বা অনুষ্ঠানের জন্য নয়, আজকাল অনেকেই এটি সপ্তাহান্তে পরিবারের জন্য রান্না করেন। আজকের এই রেসিপিতে আমরা জানব কীভাবে ঘরেই রেস্টুরেন্টের মতো সুস্বাদু **চিংড়ি মালাইকারি** রান্না করা যায়।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- বড় চিংড়ি – ৬–৮টি (গলদা চিংড়ি হলে আরও ভালো)
- নারকেল দুধ – ১ কাপ (তাজা বা প্যাকেটজাত)
- পেঁয়াজ বাটা – ২ টেবিল চামচ
- আদা-রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
- টমেটো কুচি – ১টি মাঝারি
- হলুদ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- লঙ্কা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
- গরম মশলা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
- দারচিনি, লবঙ্গ, এলাচ – প্রতিটি ২টি করে
- নুন – স্বাদ অনুযায়ী
- চিনি – ১/২ চা চামচ
- সরষের তেল / সাদা তেল – ৪ টেবিল চামচ
- ঘি – ১/২ চা চামচ (ঐচ্ছিক)
- কাঁচা লঙ্কা – ৩–৪টি
চিংড়ি মালাইকারি রান্নার ধাপ ধাপে প্রণালী
১. চিংড়ি প্রস্তুত: চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে, পিঠে চির কেটে নাল ফেলে দিন। নুন ও হলুদ মেখে ১০ মিনিট ম্যারিনেট করে রাখুন।
২. চিংড়ি ভাজা: কড়াইয়ে তেল গরম করে চিংড়িগুলো হালকা করে ভেজে তুলে নিন। বেশি ভাজলে শক্ত হয়ে যেতে পারে।
৩. ফোড়ন দেওয়া: সেই তেলেই এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ ফোড়ন দিন। গন্ধ বেরোলে তাতে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে ভাজতে থাকুন। এরপর আদা-রসুন বাটা যোগ করুন।
৪. মশলা কষানো: পেঁয়াজ-রসুন ভাজা হলে টমেটো কুচি, হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো ও নুন দিন। মাঝারি আঁচে মশলা কষাতে থাকুন যতক্ষণ না তেল ছাড়ে।
৫. নারকেল দুধ দেওয়া: এবার নারকেল দুধ যোগ করুন এবং অল্প আঁচে মিশিয়ে নিন। কাঁচা লঙ্কা ও সামান্য চিনি দিয়ে দিন। ভালো করে ফুটতে দিন।
৬. চিংড়ি ফেরত: ভাজা চিংড়িগুলো এই গ্রেভিতে দিয়ে আরও ৫–৬ মিনিট ফুটিয়ে নিন। খুব বেশি রান্না করবেন না, না হলে চিংড়ি শক্ত হয়ে যাবে।
৭. গরম মশলা ও ঘি: শেষে সামান্য গরম মশলা ও ঘি ছড়িয়ে গ্যাস বন্ধ করুন। ঢেকে রেখে দিন যাতে সুগন্ধ আটকে থাকে।
৮. পরিবেশন: গরম গরম বাসমতি ভাত বা পোলাওয়ের সাথে পরিবেশন করুন। এটি অতিথি আপ্যায়নের জন্য এক অসাধারণ পদ।
রান্নার টিপস
✔ নারকেল দুধে রান্না সবসময় কম আঁচে করুন – এতে দুধ ফেটে যাবে না।
✔ চিংড়ি কখনও বেশি সময় রান্না করবেন না – এতে তা রাবারের মতো হয়ে যেতে পারে।
✔ চাইলে নারকেল দুধের সাথে সামান্য দুধ বা ক্রিম মিশিয়েও রান্না করতে পারেন।
✔ ঘি দিলে শেষ পর্যায়ে রাজকীয় ঘ্রাণ আরও বেড়ে যাবে।
শেষ কথা
"চিংড়ি মালাইকারি" শুধু একটি রেসিপি নয় – এটি বাঙালির রান্নার ঐতিহ্যের মুকুটমণি। নারকেল দুধের মোলায়েমতা ও চিংড়ির গাঢ় স্বাদ একসাথে মিলেমিশে এমন এক পদ তৈরি করে যা একবার খেলে বারবার মনে পড়ে। আপনার পরবর্তী বিশেষ দিনে এই রান্না ট্রাই করুন আর পরিবারের মুখে হাসি ফুটান।
