টাইফয়েড থেকে দ্রুত সেরে ওঠার কার্যকর উপায় ও খাদ্যতালিকা
টাইফয়েড কী এবং কেন হয়?
টাইফয়েড একটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ যা সাধারণত দূষিত পানি বা খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি স্যালমোনেলা টাইফি (Salmonella Typhi) নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। টাইফয়েড জ্বর সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং দুর্বলতা, মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। সঠিক চিকিৎসা ও যত্নের মাধ্যমে এই রোগ থেকে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।
টাইফয়েড থেকে দ্রুত সেরে ওঠার জন্য করণীয়
১. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: টাইফয়েড হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৭-১০ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকলে শরীর দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে পারে।
২. অ্যান্টিবায়োটিক নিয়মিত সেবন: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক চালিয়ে যেতে হবে। মাঝপথে ছেড়ে দিলে সংক্রমণ আবার ফিরে আসতে পারে।
৩. হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খান: হজমে সহজ এমন খাবার খান যাতে শরীর প্রয়োজনীয় শক্তি পায়। খিচুড়ি, নরম ভাত-ডাল, সবজি স্যুপ, ওটস খাওয়া যেতে পারে।
৪. পর্যাপ্ত পানি পান করুন: টাইফয়েডে শরীরে পানির ঘাটতি হতে পারে। তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি, ডাবের পানি ও ওআরএস পান করুন।
৫. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন: হাত ধোয়া, খাবার ঢেকে রাখা এবং ফুটানো পানি পান করা টাইফয়েডের পুনঃসংক্রমণ রোধে সাহায্য করে।
টাইফয়েডে যেসব খাবার খাবেন ও খাবেন না
খাবেন:
- হালকা ভাত, খিচুড়ি, ডাল
- সবজি ও চিকেন স্যুপ
- সেদ্ধ ডিম, নরম মাছ
- ডাবের পানি, ওআরএস
- সেদ্ধ ফল (আপেল, কলা, পেয়ারা)
খাবেন না:
- তেল-ঝাল-মসলা যুক্ত খাবার
- ঠান্ডা বা প্রক্রিয়াজাত খাবার (প্যাকেটজাত জুস, সফট ড্রিংক)
- দুধ বা দুধজাত ভারী খাবার (যদি হজমে সমস্যা হয়)
- রাস্তায় কেনা বা অস্বাস্থ্যকর খাবার
বিশেষ টিপস:
- টাইফয়েড থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লাগে ২-৩ সপ্তাহ, তাই ধৈর্য রাখুন।
- জ্বর চলে গেলেও ক্লান্তি থাকতে পারে, তাই একেবারে ভারী কাজ বা ডায়েট না নিন।
- রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হোন যে টাইফয়েড পুরোপুরি সেরে গেছে।
টাইফয়েড একটি গুরুতর কিন্তু নিরাময়যোগ্য রোগ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, চিকিৎসা এবং পরিচ্ছন্নতা মেনে চললে দ্রুত আরোগ্য লাভ সম্ভব। যেকোনো ওষুধ শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
